রিপোর্টার্স বিডি নিউজ ডেস্ক : বিশ্বনাথ ও সিলেট সদর উপজেলার দুই গ্রামবাসীর মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শনিবার ২টায় বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওনপুর ও সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের মিরগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বাওনপুর গ্রামবাসীর পক্ষে আহতরা হলেন- আলা উদ্দিন, ফারুক মিয়া, নজির আহমদ, গিয়াস মিয়া, সুনাই মিয়া, সুরুজ আলী, কামাল উদ্দিন, জহুর আলী গরীব উল্লাহ। মিরগাঁও গ্রামের আহতরা হলেন- এমরান আহমদ, চান মিয়া, ময়নুল ইসলাম, কাচা মিয়া, শফিক মিয়া, মোস্তফা মিয়া, লালা মিয়া, আব্দুল হামিদ, নূরুল আমিন, কাচা মিয়া। বাকি আহতদের নাম জানা যায়নি। গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা যায়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে কান্দিগাঁও ও খাজাঞ্চী ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলার মুছেধর গ্রামের আলা উদ্দিন ও বাওনপুর গ্রামের মকবুল আলী গংদের মধ্যে বিদেশের টাকা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি আলা উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় বাওনপুর গ্রামের মকবুল আলী, তার ভাই মকদ্দুছ আলী ও আলকাছ আলী এবং তাদের আত্মীয় মিরগাঁও গ্রামের আব্দুল আজিজকে আসামী করা হয়। আব্দুল আজিজকে আসামী করায় মিরগাঁও গ্রামবাসী ও বাওনপুর গ্রামবাসীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত শুক্রবার রাতে বাওনপুর গ্রামের ফেরদৌস মিয়া ও মোস্তফা মিয়াকে মিরগাঁও গ্রামের রাস্তায় পেয়ে মামলায় আসামী করার বিষয়ে জানতে চান আব্দুল আজিজ। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর বাওনপুর গ্রামরে লোকজন জানতে পারেন ফেরদৌস ও মোস্তফাকে আটকে রেখেছেন মিরগাঁও গ্রামের লোকজন। এনিয়ে শুক্রবার রাত থেকে উভয় গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। শনিবার সকালে মিরগাঁও গ্রামের কালা মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যান বাওনপুর গ্রামের লোকজন। এরই জের ধরে শনিবার বেলা ২টায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন উভয় গ্রামবাসী। খবর পেয়ে জালালাবাদ থানা, বিশ্বনাথ থানা ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ রাবার বুলেট ও কাদানে গ্যাস ছোড়ে। পরে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী ও কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে আসে। খবর পেয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুল হক ও পুলিশের সিলেট দক্ষিণ সার্কেলের এএসপি আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে মিরগাঁও গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, আলা উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মিথ্যা মামলায় আমার আত্মীয় স্বজনের সাথে আমাকেও আসামী করা হয়েছে। বিষয়টি দেখে দেওয়ার জন্য বাওনপুর গ্রামের মুরব্বিদের আমি বার বার বলে আসলেও তারা দেখে দেননি। শুক্রবার রাতে আমাদের গ্রামের রাস্তায় ফেরদৌস মিয়া কে পেয়ে আমি বিষয়টি জানতে চাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজ (শনিবার) সকালে বাওনপুর গ্রামের লোকজন আমাদের গ্রামের কালা মিয়াকে ধরে নিয়ে যায়। আর এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের গ্রামের অন্তত ২০ জন লোক আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে বাওনপুর গ্রামের মঈনুল হক বলেন, মিরেরগাঁও গ্রামের লোকজন হঠাৎ করে আমাদের গ্রামে এসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজনকে গ্রামবাসী প্রতিহত করেন। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে তিনি জানান। শনিবার রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পর্যন্ত জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বিষয়টি নিস্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছেন। উভয় গ্রামবাসী শালিসের প্রস্তাব মেনে নিয়ে মুরব্বিদের আশ্বস্থ করেছেন আইন-শৃংখলার অবনতি ঘটে এই ধরনের কোন কর্মকান্ড ঘটবে না। এসময় উপস্থিত ছিলেন- খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পীর লিয়াকত হোসাইন, বিশিষ্ট মুরব্বি মাসুক মিয়া, মহল মিয়া, আশরাফ চৌধুরী, আব্দুস সামাদ, আব্দুর রহমান প্রমূখ।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন Blogger Facebook