রিপোর্টার্স বিডি নিউজ ডেস্ক : সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীর শ্লীনতাহানির চেষ্টা ও তার পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। জানা যায়,উপজেলার শ্রীরামপুর শেখপাড়া গ্রামের মৃত গেদন মিয়ার নিরীহ বিধবা স্ত্রী মেহেরজানের সাথে একই এলাকার প্রভাবশালী মুহিবুর রহমানের জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল। মুহিবুর রহমানের ছেলে তামিমের সাথে মেহেরজানের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রী ইমা বেগমের বিয়ের প্রস্তাব দিলে তামিম বখাটে হওয়ার কারণে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হননি ইমা বেগমের মা মেহেরজান। মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার সময় প্রতিদিনই মেহেরজানের মেয়ে ইমা বেগমকে বিরক্ত করত তামিম ও তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে ইমা বেগমের মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন মেহেরজান। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টার সময় তামিম ও তার সহযোগী একই এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে নাছির ইমাকে জোরপূর্বক সিএনজি গাড়ীতে উঠিয়ে তামিমের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে ইমা বেগমের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালায় তামিম। খবর পেয়ে ইমা বেগমের মা মেহেরজান বেগম ও তার মামত ভাইয়েরা গিয়ে তাড়াতাড়ি তামিমের বাড়িতে গিয়ে প্রাণপন চেষ্টা করে ইমাকে তামিম ও নাছিরের কবল থেকে মুক্ত করে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এসময় ইমা বেগমের পরনের কাপড় ছেড়া ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান মেহেরজান। সাথে সাথে তামিমের পরিবারের লোকজন মেহেরজানের বাড়ীতে এসে আক্রমন চালায়। আহতরা হলেন, নানু মিয়ার ছেলে আমান, জামান, মৃত গেদন আলীর ছেলে রাজন, রিপন, চুনু মিয়ার স্ত্রী মুন্না বেগম, টুটন মিয়ার স্ত্রী রুমানা আক্তার। আহতরা নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তামিমের পক্ষের আহতরা হলেন শেখপাড়া মুহিবুর রহমান (৫৯), তার ছেলে হাফিজ মো. শামিল আহমদ (২২) ও শাকিল আহমদ (২০)। এক পর্যায়ে মুহিবুর রহমানের ছেলে নাদির, মৃত ছমির মিয়ার ছেলে মুহিবুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের স্ত্রী রাজনা বেগম মেহেরজানের বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে পরিবারের সবাইকে এলোপাতাড়ি মারপিঠ করে বালিশের নিচ থেকে আলমিরার চাবি নিয়ে আলমিরার লকার খুলে ইমা বেগমের বিয়ের জন্য জমানো নগদ ২ লক্ষ টাকা ও ৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার যার আনুমানিক মূল্য দেড় লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বিধবা মেহেরজানকে শাসিয়ে যায় যে, এ ব্যাপারে থানায় মামলা মোকদ্দমা করলে তোদেরকে শান্তিতে থাকতে দেব না। এদিকে মাদ্রাসা ছাত্রী ইমা বেগম বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৩নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। আলমপুর পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এসআই আব্দুস শহিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। শেখপাড়া এলাকায় মারামারিঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইনচার্জ বলেন, ঐ গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে দু’পক্ষের লোকজন আহত। মাদ্রাসা ছাত্রী ইমা বেগমের উপর নির্যাতনের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমার জানা নেই। ঘটনার খবর পেয়ে মোগলাবাজার থানার সহকারী কমিশনার অপূর্ব সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানায় উভয় পক্ষ মামলার দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন Blogger Facebook