বিশেষ প্রতিবেদক : সিলেটের শীর্ষস্থানীয় ওলামা মাশায়েখ, মুফতিয়ানে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ অভিমত রেখেছেন, পবিত্র হাদিস শরীফে সাদকাতুল ফিতরকে যাকাত হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এটা আদায় করা ওয়াজেব। সুতরাং যাকাতুল ফিতর আদায় করার ব্যাপারে কোন গাফলতি করা বা ইচ্ছাকৃত ত্রুটি-বিচ্যুতি রাখা গোনাহর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মালে নেসাবের মালিক নারী-পুরুষ সকল মুসলমানকেই ফিতরা আদায় করতে হয়। যাকাতের নেসাব এক বছর থাকা শর্ত আর ফিতরার নেসাব কেবল ঈদের দিন থাকা শর্ত। প্রত্যেক ব্যক্তিই সর্বনিম্ন হারে ফিতরা দিলে সম্পদের পবিত্রতা যথাযথভাবে হাসিল হবে না। বিত্তবান ও মধ্যবিত্তদের সম্পদের হারাহারি হিসাবে সর্বোচ্চ ফিতরা দিতে হবে। তাতেই ফিতরার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাসিল হবে। এ জন্য বিত্তবানদের খেজুর, কিসমিস, জব, পনির ও খুরমা দিয়ে ফিতরা আদায় করা বাঞ্চনীয়। কারণ ধনীর সম্পদে যাকাত-ফিতরা গরীবের অধিকার। এটা নিছক অনুকম্পা নয় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
বুধবার বাদ জোহর মহানগরীর বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখা আয়োজিত ‘দারিদ্র বিমোচনে যাকাত ও ফিতরার ভূমিকা এবং স্থানীয়ভাবে ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ অভিমত রাখেন।
সেমিনারে কোরআন-হাদিসের আলোকে বিশদ আলোচনার পর এবার সিলেট মহানগরী ও আশেপাশের এলাকার জন্য ফিতরার সর্বনিম্ন হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা, যা আটা অর্ধেক ‘সা’ (১ কেজি ৬৯০ গ্রাম) মূল্যের সমন্বয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও এতে বিত্তবানদের প্রতি জনপ্রতি ৩ কেজি ৩৮০ গ্রাম খেজুর, খুরমা, কিসমিস, যব ও পনিরের যে কোন একটির স্থানীয় বাজার মূল্যে ফিতরা আদায় করার আহবান জানিয়ে বলা হয়, এর চেয়ে বেশি মূল্য দেয়া যাবে; কিন্তু কম দিলে ফিতরা আদায় হবে না।
বিত্তবানদের জন্য ফিতরা সর্বোচ্চ ৩ কেজি ৩৮০ গ্রাম কিসমিসের বর্তমান বাজার মূল্য ১০২০ টাকা মূল্য নির্ধারণ পূর্বক এর মোকাবেলায় ধান, চাল, কাপড় বা অন্যান্য দ্রব্যাদি দিয়েও ফিৎরা আদায় করা যাবে বলে সেমিনারে মত প্রকাশ করা হয়।
আরো অভিমত রাখা হয়, ন্যূনতম একজনের ফিতরা একজনকেই দেয়া উত্তম, আবার একজনকে কয়েকজনের ফিতরাও দেয়া যাবে। ফিতরা আদায় করতে হবে ঈদের জামাতের আগে। পরে আদায় করলে তা আর সাদাকাতুল ফিতর হিসাবে গণ্য হবে না।
সংগঠনের মহানগর শাখা সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাবের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্বাসিমুল উলুম দরগায়ে হযরত শাহজালাল (র) মাদরাসার শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আজাদ দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বাসিত বরকতপুরী, সিলেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোস্তাক আহমদ খান, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ক্বারী মাওলানা আব্দুল মতিন, হযরত শাহজালাল ডিওয়াই কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মুফতি আবু সালেহ কতবুল আলম, কুদরত উল্লাহ হাফিজিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল হাফিজ মিফতা উদ্দিন প্রমুখ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জামেয়া দারুল হুদা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম ও ইমাম সমিতির সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন Blogger Facebook